যে ঘরে ছাদ নেই সে ঘর রোদ বৃষ্টি ঝড় শিলা এমনকি শিশিরও ভিজিয়ে দেয়। ছাদ ছাড়া কি কোন ঘর ভাবা যায় ? না তা ঘর হলেও বাসযোগ্য ? বাবা হচ্ছেন ঠিক ছাদের মতন। নিজের বুক পেতে দিয়ে জীবনের রোদ বৃষ্টি ঝড় শিলা এমনকি শিশির থেকে সন্তান আর পরিজনকে সুরক্ষা দেন। এই ছাদ যে কত শক্তিশালী আর মর্মস্পর্শী সেটার কিছুটা বুঝেছিলাম নিজে বাবা হয়ে আর সবটা বুঝলাম বাবা না ফেরার দেশে যাবার পর। এ ব্যাথা শুধু সেই অনুভব করবে যার হারিয়েছে।
ঝিনেদা পাগলা কানাই মোড় থেকে ১১ কি:মি: দূরে মোক্তার ভাইয়ের আবাস। ইজিবাইক অথবা ভটভটি গ্রাম বাংলায় করে যেতে হবে গান্নার আলামপুর। ঢোল সমুদ্র পুকুরকে বায়েঁ রেখে সোজা রাস্তায় বাড়ি বাথান, জামতলা, কুঠি দূর্গাপুর শৈলমারী বাজার, কালুহাটি পেরিয়ে আলামপুর বটতলা। সেখান থেকে ৫০০ গজ আগালেই ডাইনে মোক্তার ভাইয়ের পরিত্যাক্ত সাবেক বাসস্থান আর বায়ে বাঁশবাগানে বর্তমান বসতঘর। গেল বছর থেকে যেখানে মোক্তার ভাই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নিয়েছেন।জাতীয় উদ্যেক্তা সম্মেলন থেকে বাড়ী ফেরার পথে যিনি চলে গেছেন লোক চক্ষুর অন্তরালে। মৃত্যু চোখের আড়াল করলেও তাকে আমাদের মনের আড়াল করতে পারে নি, পারবে না।
ভাবী আরজু তারা বেগম, ভাইপো জামিরুল, আমির হামজা, সায়েম সহ পরিবারের অন্যান্য স্বজনদের সাথে আমাদের যোগাযোগ নিয়মিত। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মোক্তার ভাইয়ের সন্তানদের পড়ালেখা চালিয়ে যাবার জন্য আমরা একটি ছোট্ট তহবিল করছি অনেকটা সিএসআর ফান্ডের আদলে। আমাদের ডিজিটাল সেন্টারের আয়ের ক্ষুদ্র একটি অংশ তুলে দেব প্রয়াত মোক্তার ভাইয়ের সন্তানদের শিক্ষা ব্যয় হিসাবে। শুধু উদ্যোক্তা বন্ধুরা নয় ভালবেসে যে কেউ অংশ নিতে পারবেন এই কর্মসুচিতে। তবে কারো কাছে আমরা জোর জবরদস্থি করবো না। আমাদের পরিকল্পনা যারা এতে অংশ নিবেন তারা স্বেচ্ছায় যোগাযোগ করবেন আমাদের সাথে। সর্বনিম্ন সহায়তা মাসে ১০০ টাকা আর সবোর্চ্চ যার যার সাধ্য অনুপাতে। ইচ্ছা করলে যে কেউ দিতে পারেন বার্ষিক বা এক কালিন হিসাবে। এ তহবিল থেকে প্রতিমাসে মোক্তার ভাইয়ের পরিবারের কাছে পৌছেঁ দেয়া হবে। আমাদের আশা আমরা এটা চালিয়ে যাব ততদিন পর্যন্ত যতদিন না আমাদের ভাইপোরা নিজেদের পায়ে দাড়াতে পারে।
আগামী ৫ মার্চ শনিবার আমরা সবাই আবার ঝিনেদা যাচ্ছি। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ইউএনও স্যারের নেতৃত্বে ঝিনাইদহ ডিসি স্যারের উপস্থিতিতে ভাইপো জামিরুল আর আমির হামজাকে নতুন বছরের স্কুল ড্রেস, জুতা, স্কুল ব্যাগ সহ শিক্ষা উপকরণ দিতে। সেই সাথে দিতে চাই দুই ভাইপোর এক বছরের শিক্ষা ব্যয়। উদ্যোগটি রিয়াল অন্ট্রাপ্রিনিয়র গ্রুপের হলেও কর্মসূচির সার্বিক দেখভাল করবেন ঝিনেদা সদর উপজেলার উদ্যোক্তা বন্ধুরা আর সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করবেন মহারাজপুর ইউডিসি উদ্যোক্তা বন্ধু অনুপ দা। যে কেউ এই কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করে অংশ নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে যারা অংশ নিতে চান বা সহযোগিতা করতে চান তারা দয়া করে যোগাযোগ করুন বগুড়ার পিরব ইউডিসি উদ্যোক্তা জাহাংগীর ভাইয়ের সাথে। মুঠোফোনে কথা বলতে পারেন ০১৭৪৪ ৫১৭০৫৫ নাম্বারে। যারা সহায়তা প্রদান করবেন বা অংশ নিবেন আমাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য নিয়মিত অনলাইনে সে সব তথ্য প্রকাশ করবো।
মৃত্যুকে পরাস্থ করতে চাই প্রানের এ মিলের কাছে। অঝরো কান্নারত ভাইপো জামিরুলকে সেদিন কথা দিয়েছিলাম বাবা নেই তাতে কি চাচারা তো আছে। আমরা আছি, তোমাদের পাশে থাকবো যত দিন বাঁচি।
ছবি
ফাইল
প্রকাশনের তারিখ
২০১৬-০৬-০৭
আর্কাইভ তারিখ
২০২৫-১১-২৯